সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি এবং ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবন সংলগ্ন ফ্লাইওভার এলাকার রেললাইন অবরোধ করে দুপুর ১২টার দিকে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় রেললাইন সংলগ্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কর্মসূচিতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন। পরে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে একটি মিছিল বের করেন তারা।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হল ও সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর ১২টায় কৃষি অনুষদ ভবন সংলগ্ন ফ্লাইওভার এলাকার রেললাইনে মিলিত হয়।
শিক্ষার্থীরা চারটি দাবি উত্থাপন করে আন্দোলন করছেন। দাবিগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার, কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা কোটায় শূন্যপদ পূরণ, জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটার ব্যবহার (এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত), প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা।
আন্দোলনকারীরা জানান, সারা দেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তারা এক দফা দাবিতে একমত পোষণ করেছেন। দাবিটি হলো সরকারি চাকরির সব গ্রেডে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার।
রাবি কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, তারা রেললাইন অবরোধ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন। রাষ্ট্রীয় সম্পদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে তারা লক্ষ রাখছেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা পদ্ধতির কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘আদায় হবে দাবি, পথ দেখাবে রাবি’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘কোটা-বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় কোটা পদ্ধতির ঠাঁই নাই’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর’,‘বৈষম্যর বিরুদ্ধে লড়াই করো একসাথে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা গান ও কবিতা পরিবেশন করেন।